বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার পদ্ধতি - বিডি ট্যাক্সেশন
করদাতার বার্ষিক আয়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করার মাধ্যম হচ্ছে আয়কর রিটার্ন। আয়কর রিটার্ন বা ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাংলাদেশের সকল করদাতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এর মাধ্যমে করদাতার বার্ষিক আয়-ব্যয় সম্পদ ও দায়ের তথ্য কর কর্তৃপক্ষ যাচাই করে থাকে। রিটার্ন জমাদানের প্রক্রিয়া করদাতা হিসেবে আপনাকে সময়মতো কর প্রদান এবং কর সংক্রান্ত জরিমানা এড়াতে সাহায্য করবে।
কারা আয়কর রিটার্ন জমা দিতে বাধ্য?
আয়কর আইন-২০২৩ এর ধারা-২৬৬ অনুযায়ী বাংলাদেশের কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের করযোগ্য আয়ের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া অত্যাবশ্যক। তবে কোনও ব্যক্তির আয় করযোগ্য হলে তাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। উক্ত ধারার উপধারা-(১) অনুযায়ী অনুসারে নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গের জন্য উপকর কমিশনারের নিকট সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের জন্য রিটা র্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক;
(ক) সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে ব্যক্তির আয় এই আইনের অধীন করমুক্ত আয়ের সীমা অতিক্রম করে;
(খ) সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের অব্যবহিত পূর্ববর্তী ৩ (তিন) বৎসরের মধ্যে যেকোনো বৎসর ব্যক্তির কর নির্ধারণ করা হয়;
(গ) উক্ত ব্যক্তি একটি কোম্পানি, কোনো শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার কর্মচারী, কোনো ফার্ম, কোনো ফার্মের অংশীদার, কোনো ব্যক্তিসংঘ, কোনো ব্যবসায় নির্বাহী বা ব্যবস্থাপকের পদধারী কোনো কর্মচারী, কোনো গণকর্মচারী হন বা কোনো অনিবাসী হন যাহার বাংলাদেশে স্থায়ী স্থাপনা রয়েছে;
(ঘ) উক্ত ব্যক্তি, কেবল দাতব্য উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যতীত, সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে এরূপ কোনো আয় প্রাপ্ত হন, যা অংশ ৬ এর প্রথম অধ্যায়ের অধীন কর অব্যাহতি বা হ্রাসকৃত করহার সুবিধাপ্রাপ্ত;
(ঙ) ধারা ২৬১ অনুসারে করদাতা হিসাবে নিবন্ধনযোগ্য কোনো ব্যক্তি; বা
(চ) উক্ত ব্যক্তির ধারা ২৬৪ অনুযায়ী রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দাখিলের বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে।
নির্ধারিত সময়ে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার বাধ্যবাধকতা
যেক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত, ধারা ১৬৬, ১৭২, ১৯১, ১৯৩ বা ২১২ এর অধীন কোনো ব্যক্তি রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হন, সেইক্ষেত্রে উপ-কর কমিশনার উক্ত ব্যক্তির সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের উপর ধার্যকৃত করের ১০% হারে জরিমানা আরোপ করতে পারবেন, যা ন্যূনতম ১ হাজার টাকা হবে এবং ব্যর্থতা অব্যাহত থাকলে ব্যর্থতা অব্যাহত থাকাকালীন প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করতে পারিবেন। তবে এক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত শর্ত প্রযোজ্য;
(ক) কোনো ব্যক্তি করদাতা, যার ইতঃপূর্বে কখনো কর নির্ধারণ হয়নি তার ক্ষেত্রে অনধিক ৫ হাজার টাকা;
(খ) কোনো ব্যক্তি করদাতা, যার ইতঃপূর্বে কর নির্ধারণ হয়েছে, তার ক্ষেত্রে সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের উপর প্রদেয় করের ৫০% বা ১ হাজার টাকার মধ্যে যা অধিক তাই জরিমানা হিসেবে পরিগণিত হবে।
কোনো ব্যক্তি যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত রিটার্ন দাখিল না করলে নিম্নোক্ত শর্ত প্রযোজ্য
(ক) ধারা ১৭৭ এর অধীন কোনো রিটার্ন, তথ্য দাখিল বা উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছেন সেক্ষেত্রে উপ-কর কমিশনার উক্ত ব্যক্তির উপর তার সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের উপর ধার্যকৃত করের ১০% অথবা ৫ হাজার টাকা, দু'টির মধ্যে যা অধিক, সেই পরিমাণ জরিমানা আরোপ করতে পারবেন এবং ব্যর্থতা অব্যাহত থাকলে, ব্যর্থতা অব্যাহত থাকাকালীন প্রতি মাসের জন্য অথবা তার ভগ্নাংশের জন্য ১ হাজার টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করতে পারবেন;
(খ) ধারা ১৪৫ এর অধীন কোনো সার্টিফিকেট প্রদান করিতে ব্যর্থ হয়েছেন, সেক্ষেত্রে উপ-কর কমিশনার উক্ত ব্যক্তির উপর ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করতে পারিবেন এবং ব্যর্থতা অব্যাহত থাকলে, ব্যর্থতা অব্যাহত থাকাকালীন প্রতি মাস অথবা মাসের ভগ্নাংশের জন্য ১ হাজার টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করতে পারবেন;
(গ) ধারা ২০০ এর আবশ্যকতা অনুযায়ী কোনো তথ্য উপস্থাপনে ব্যর্থ হন, সেক্ষেত্রে যে আয়কর কর্তৃপক্ষ ধারা ২০০ এর অধীন তথ্য চেয়েছে সেই কর্তৃপক্ষ উক্ত ব্যক্তির উপর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করতে পারবেন এবং ব্যর্থতা অব্যাহত থাকিলে, ব্যর্থতা অব্যাহত থাকাকালীন প্রতিদিনের জন্য ৫০০ টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করতে পারবেন।
সঠিক সময়ে কর রিটার্ন দাখিল না করলে আপনি উপরোক্ত জরিমানাসমূহের সম্মূখীন হতে পারেন। সেক্ষেত্রে জরিমানা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সঠিক সময়ে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা অত্যাবশ্যক।
আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়সীমা কি?
বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সাধারণ সময়সীমা প্রতি বছর পহেলা জুলাই থেকে ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রয়োজনে সময়সীমা বাড়াতে পারে। তবে জরিমানা বা আইনগত ব্যবস্থা এড়াতে সময়মতো রিটার্ন জমা দেওয়া প্রত্যেক করদাতার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনো করদাতা ৩০ নভেম্বর বা কর দিবসের পরে রিটার্ন দাখিল করতে না পারেন, তাহলে অন্তত ছয় ধরনের সুবিধা পাবে না, যেমন:
১. কর অব্যাহতির সুবিধা পাবেন না, অর্থাৎ যেকোনো ধরনের কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয় করযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
২. করমুক্ত আয়ের সুবিধা পাবেন না।
৩. হ্রাসকৃত হারে কর প্রদানের সুবিধা পাবেন না।
৪. বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত সুবিধা পাবেন না।
৫. আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ১৭৪ অনুযায়ী অতিরিক্ত কর পরিশোধ করতে হবে।
৬. আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৬৬ অনুযায়ী নির্ধারিত হারে জরিমানা প্রযোজ্য।
আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে আরও যে সকল সমস্যায় পড়তে পারেন:
১. নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন জমা না দিলে পরবর্তীতে ট্রেড লাইসেন্স করতে পারবেন না। আয়কর জমা দেওয়ার তথ্য ভিসার জন্য প্রয়োজন হবে।
২. সময়মতো রিটার্ন না দিলে এক হাজার টাকা অথবা আগের বছরের ট্যাক্সের ১০% জরিমানা হতে পারে, যেটি বেশি হবে সেটি পেনাল্টি হিসেবে ধরা হবে।
৩. কয়েক বছর ধরে রিটার্ন দাখিল না করলে প্রতিদিন ৫০ টাকা করে জরিমানা হতে পারে।
৪. পুরোনো করদাতাদের ক্ষেত্রে গত বছরের করের ৫০% পর্যন্ত বাড়তি দিতে হতে পারে।
৫. করযোগ্য হলেও কর না দিলে তিন ধরনের জরিমানা হতে পারে: বকেয়া করের ২৫% বাড়তি জরিমানা, প্রতি মাসে ২% সরল সুদ এবং বকেয়া করের সমপরিমাণ জরিমানা।
একজন করদাতার জন্য উপরোক্ত সুবিধাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা প্রয়োজন যাতে করদাতা উক্ত সমস্যাগুলো এড়াতে পারবেন।
বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার ধাপগুলো কী কী?
আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সাধারণ ধাপগুলো নিচে দেওয়া হলো:
১। আপনার TIN সংগ্রহ করুন: যদি আপনার TIN না থাকে, তাহলে NBR ওয়েবসাইটের মাধ্যমে TIN নিবন্ধন করুন।
২। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করুন: অর্থবছরের জন্য আপনার সমস্ত আয়, সম্পদ এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করুন। আপনি যদি বেতনভুক্ত কর্মচারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার স্যালারি সার্টিফিকেট এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে। এর বাইরে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি লাগবে।
৩। আপনার করযোগ্য আয় হিসাব করুন: আপনার মোট আয় নির্ধারণ করুন এবং প্রযোজ্য ছাড় বা ভাতাগুলো বাদ দিন।
৪। আয়কর রিটার্ন ফর্ম পূরণ করুন: অনলাইনে বা ম্যানুয়ালি রিটার্ন ফর্ম পূরণ করুন। অনলাইনে আপনার আয়কর রিটার্ন নির্ভুলভাবে প্রস্তুত করতে NBR এর অফিসিয়াল সাইট অথবা www.bdtaxation.com এ।
৫। ফর্ম জমা দিন: আপনি অনলাইনে বা নিকটস্থ কর অফিসে এটি জমা দিতে পারেন।
নির্ভুলভাবে আপনার আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত করতে প্রয়োজনে একজন ট্যাক্স কনসালটেন্ট বা কর বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে পারেন অথবা সরাসরি বিডিট্যাক্সেশন থেকে খুব সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্যাদি পূরণ করে নিজেই নিজের রিটার্ন তৈরি করতে পারেন।
বাংলাদেশে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন কিভাবে জমা দিবেন?
অনলাইনে জমা দেওয়া অনেক করদাতার জন্য একটি সহজ ও সুবিধাজনক বিকল্প। নিচে বাংলাদেশে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার ধাপগুলো দেওয়া হলো:
১। NBR-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান: www.nbr.gov.bd
২। আপনার TIN এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন বা একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
৩। ড্যাশবোর্ড থেকে e-return অপশন নির্বাচন করুন।
৪। প্রয়োজনীয় সকল আর্থিক তথ্য পূরণ করুন, যেমন আপনার আয়, ছাড়, এবং পরিশোধিত করের বিবরণ।
৫। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান করা কপি সংযুক্ত করুন, যেমন বেতন সনদ এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
৬। ফর্মটি ইলেকট্রনিকভাবে জমা দিন এবং নিশ্চিতকরণ সংরক্ষণ করুন।
এছাড়াও আপনি বিডিট্যাক্সেশনের মাধ্যমে খুব সহজেই নিজেই নিজের আয়কর রিটার্ন তৈরি করতে পারবেন।
কিভাবে ডকুমেন্ট-বেসড ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিবেন?
যদি আপনি ঐতিহ্যগত ডকুমেন্ট নির্ভর পদ্ধতিতে রিটার্ন জমা দেওয়া অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার থেকে একটু জটিল। তবে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি রিটার্ন ফর্ম পূরণ করে সশরীরে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন:
১। নিকটস্থ কর অফিস থেকে অথবা বিডিট্যাক্সেশন থেকে আয়কর রিটার্ন ফর্ম সংগ্রহ করুন।
২। আয়-ব্যয়, সম্পদ, কর রেয়াত, এবং অগ্রীম কর প্রদানের সঠিক তথ্য দিয়ে রিটার্ন ফর্ম পূরণ করুন।
৩। প্রাসঙ্গিক আর্থিক কাগজপত্রের ফটোকপি রিটার্ন ফর্মের সাথে সংযুক্ত করুন।
৪। নিকটস্থ কর অফিসে পূরণকৃত রিটার্ন ফরম জমা দিন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিকট থেকে রিটার্ন জমার রশিদ সংগ্রহ করুন।
আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সাধারণ ভুলসমূহ
আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় করদাতারা প্রায়ই কিছু সাধারণ ভুল করে থাকেন, যা জরিমানা বা অতিরিক্ত কর পরিশোধের কারণ হতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ ভুল এবং তা এড়ানোর উপায় দেওয়া হলো:
১. সঠিক আয় না দেখানো: অনেকেই ভুলবশত তাদের মোট আয়ের সব উৎস রিটার্নে উল্লেখ করেন না। আপনি যদি সম্পূর্ণ আয়ের তথ্য প্রদান না করেন, তাহলে কর কর্তৃপক্ষ আপনার উপর জরিমানা আরোপ করতে পারে।
২. করছাড়ের সুযোগগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার না করা: অনেক করদাতা করছাড়ের জন্য যোগ্য বিনিয়োগ এবং ব্যয় উল্লেখ করতে ভুলে যান। নিশ্চিত করুন যে আপনি স্বাস্থ্য বীমা, শিক্ষার খরচ, এবং অন্যান্য বিনিয়োগের করছাড় সঠিকভাবে উল্লেখ করেছেন।
৩. ফর্ম ভুলভাবে পূরণ করা: আয়কর রিটার্ন ফর্মে তথ্য ভুলভাবে পূরণ করলে তা রিটার্ন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে পারে এবং আপনাকে পুনরায় রিটার্ন জমা দিতে হতে পারে। তাই ফর্মটি খুব মনোযোগ সহকারে পূরণ করা উচিত।
৪. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত না করা: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন আয় এবং করের প্রমাণপত্র সঠিকভাবে সংযুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর অভাবে আপনার রিটার্ন বাতিল বা মুলতবি হতে পারে।
প্রথমবার আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা
প্রথমবারের জন্য কর রিটার্ন জমা দেওয়া অনেকের কাছে জটিল প্রক্রিয়া মনে হতে পারে। সেক্ষত্রে নিম্নবর্ণিত অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা আপনার কাজকে সহজ করবে;
১. প্রথমে ড্রাফট ফর্ম পূরণ করুন: রিটার্ন ফর্ম পূরণ করার আগে একটি ড্রাফট কপি ব্যবহার করে ফর্মটি পরীক্ষা করুন। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কীভাবে ফর্মটি পূরণ করতে হবে এবং আসল ফর্ম পূরণ করার সময় অপ্রত্যাশিত ভুলগুলো এড়ানো সহজ হবে।
২. অনলাইন টুল ব্যবহার করুন: যদি আপনি অনলাইনে জমা দেন, তাহলে NBR-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে থাকা গাইডলাইন অনুসরণ করুন বা থার্ড-পার্টি ট্যাক্স সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু ধাপ পূরণ করে সহজ করে দেয়। সেক্ষেত্রে বিডিট্যাক্সেশন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে রিটার্ন তৈরির সকল ধাপগুলো সহজেই আপনার রিটার্ন প্রস্তুত করতে পারে।
৩. রিটার্ন জমা দেওয়ার সঠিক সময়সীমা মেনে চলুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়সীমা মেনে চলা জরুরি, কারণ সময়মতো জমা না দিলে আপনি জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন। মনে রাখুন, আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সাধারণ সময়সীমা ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত।
সাধারণ জিজ্ঞাসা
১. বাংলাদেশে আমি কি কর ছাড় পেতে পারি?
বাংলাদেশে প্রচলিত আয়কর আইন অনুসারে সরকারি বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ এবং দাতব্য সংগঠনে দানের ক্ষেত্রের কর ছাড় দেওয়া হয়।
২. বাংলাদেশে বিদেশিরা কি কর রিটার্ন জমা দিতে হবে?
যদি কোনো বিদেশি বাংলাদেশে বছরে ১৮২ দিনের বেশি থাকেন এবং তাদের আয় করযোগ্য সীমার বেশি হয়, তাহলে তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে।
৩. অনলাইনে আয়কর জমা দেওয়া কি নিরাপদ?
হ্যাঁ, NBR-এর অনলাইন কর জমা দেওয়ার সিস্টেম নিরাপদ এবং এটা আপনার রিটার্ন জমা দেওয়ার অন্যতম সহজ উপায়।
পরিশেষে
প্রয়োজনীয় সচেতনতা এবং কিছু নিয়ম মেনে আপনি খুব সহজেই আয়কর রিটার্ন নিজেই প্রস্তুত করে জমা দিতে পারবেন। যদিও প্রাথমিকভাবে অনেকের নিকট রিটার্ন তৈরি এবং দাখিলের প্রক্রিয়াকে জটিল মনে হতে পারে। কিন্তু যথাযথ সচেতনতা এবং নিয়মাবলী অনুসরণ করে সহজেই যে কেউ এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত এবং জমাদানের ক্ষেত্রে যেকোনো সহায়তার জন্য ভিজিট করুন বিডিট্যাক্সেশনের ওয়েবসাইটে অথবা সরাসরি ডাউনলোড করুন বিডিট্যাক্সেশন অ্যাপ।
Comments (0)