Frequently Ask Question

কোন স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার মৎস্য খাতে আয় থাকলে তাকে সাধারণ করহারে কর প্রদান করতে হবে। তবে উক্ত করদাতার যদি এই ধরনের কৃষি আয় এবং আর্থিক পরিসম্পদ খাত ছাড়া অন্য কোন খাতে আয় না থাকে, তাহলে করদাতার উক্ত আয়ের ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত প্রাপ্তি থাকবে।

হিসাববর্ষ শেষ হওয়ার পূৃর্বে পরিশোধিত আয়করই অগ্রিম আয়কর। আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ১৫৫ অনুযায়ী অগ্রিম কর পরিশোধ করতে হয়।  অগ্রিম কর সর্বোচ্চ ৪ (চার) কিস্তিতে পরিশোধ করা যায়। অগ্রিম কর পরিশোধের সময় নিম্নরূপঃ

পরিশোধের সময় পরিশোধতব্য অর্থের পরিমাণ
১৫ সেপ্টেম্বর ২৫% (পচিশ শতাংশ)
১৫ ডিসেম্বর ২৫% (পচিশ শতাংশ)
১৫ মার্চ ২৫% (পচিশ শতাংশ)
১৫ জুন ২৫% (পচিশ শতাংশ)

 

মহিলা করদাতাদের করহার (২০২৫-২০২৬ করবর্ষ)

ক্রমিক নং আয়ের পরিমাণ করহার
(ক)

মহিলা করদাতার প্রথম ৪,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর

কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান/পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০,০০০/- টাকা অধিক হইবে; প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা ও মাতা উভয়েই করদাতা হইলে যেকোনো একজন এই সুবিধা ভোগ করিবেন

 শূন্য
(খ) পরবর্তী ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ৫%
(গ) পরবর্তী ৪,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১০%
(ঘ) পরবর্তী ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১৫%
(ঙ) পরবর্তী ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২০%
(চ) পরবর্তী ২০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২৫%
(ছ) অবশিষ্ট মোট আয়ের উপর ৩০%

উল্লেখিত করহার করদাতার মর্যাদা নির্বিশেষে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারক করদাতার উক্ত ব্যবসা হতে অর্জিত আয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

কোন স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার গবাদিপশু পালন খাতে আয় থাকলে তাকে সাধারণ করহারে কর প্রদান করতে হবে। তবে উক্ত করদাতার যদি এই ধরনের কৃষি আয় এবং আর্থিক পরিসম্পদ খাত ছাড়া অন্য কোন খাতে আয় না থাকে, তাহলে করদাতার উক্ত আয়ের ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত প্রাপ্তি থাকবে।

 

কর রেয়াত কি?

একজন করদাতা তার বাৎসরিক আয়ের উপর কর প্রদান করে থাকেন। প্রদেয় কর হতে একটি অঙ্ক করদাতা কম পরিশোধ করতে পারেন। করদাতা যে পরিমাণ অঙ্ক কর কম প্রদান করেন তাই কর রেয়াত। তবে কর রেয়াত পেতে হলে করদাতাকে অবশ্যই সরকার অনুমোদিত যেসকল খাতে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত পাওয়া যায় সেসকল খাতে বিনিয়োগ করতে হবে।

কর রেয়াত পরিগণনার পদ্ধতি কি?

আয়কর আইন, ২০২৩ এর  ষষ্ঠ তফসিল এর অংশ ৩ অনুযায়ী বিনিয়োগ করা হলে বিনিয়োগের সূত্র নিম্নরূপঃ

(ক) কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয়, হ্রাসকৃত করহার প্রযোজ্য এইরূপ আয়, অংশীদারী ফার্মের আয় এবং চূড়ান্ত করদায় প্রযোজ্য এইরূপ আয় বাদ দিয়া পরিগণিত  মোট আয়ের = ৩%

(খ) কোনো আয়বর্ষে  ষষ্ঠ তফসিল এর অংশ ৩ অনুসারে করদাতার মোট বিনিয়োগ ও ব্যয়ের পরিমাণের উপর = ১৫% অথবা

(গ) সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে যেটি কম সেটি কর রেয়াত পাবেন।

 

অর্থ আইন, ২০২৪ এর মাধ্যমে নিম্নরূপ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে

(১) কোনো করদাতা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসাবে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোট জনবলের অন্যুন ১০% (দশ শতাংশ) অথবা ২৫ (পঁচিশ) জনের অধিক কর্মচারী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে নিয়োগ করিলে উক্ত করদাতাকে প্রদেয় করের ৫% (পাঁচ শতাংশ) অথবা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি-কর্মচারীগণের পরিশোধিত মোট বেতনের ৭৫% (পঁচাত্তর শতাংশ), যাহা কম, কর রেয়াত প্রদান করা হইবে।

(২) কোনো করদাতা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসাবে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোট জনবলের অন্যুন ১০% (দশ শতাংশ) অথবা ২৫ (পঁচিশ) জনের অধিক কর্মচারী তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে নিয়োগ করিলে উক্ত করদাতাকে প্রদেয় করের ৫% (পাঁচ শতাংশ) অথবা তৃতীয় লিঙ্গের কর্মচারীগণের পরিশোধিত মোট বেতনের ৭৫% (পঁচাত্তর শতাংশ), যাহা কম, কর রেয়াত প্রদান করা হইবে।

একজন করদাতা তার আয়কর রিটার্ন নিজেই তৈরী করে জমা করতে পারবেন। তবে রিটার্ন তৈরীর ক্ষেত্রে ভুলভ্রান্তি এড়ানোর জন্য আয়কর আইন এবং রিটার্ন পূরণ পদ্ধতি সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা আইনজীবির মাধ্যমে রিটার্ন তৈরী করে জমা করতে পারেন।

অর্থ আইন, ২০২৪ এর মাধ্যমে আইটি সেক্টরের বিভিন্ন খাতের আয়কে ১, জুলাই ২০২৪ হইতে ৩০ জুন, ২০২৭ পর্যন্ত করমুক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। খাতগুলি নিম্নরূপঃ
 
(ক) এআই বেসড সলিউশন ডেভেলপমেন্ট (AI based solution developement);
(খ) ব্লকচেইন বেসড সলিউশন ডেভেলপমেন্ট (blockchain based solution developement);
(গ) রোবোটিক্স প্রসেস আউটসোর্সিং (robotics process outsourcing);
(ঘ) সফটওয়্যার অ্যাজ এ সার্ভিস (software as a service);
(ঙ) সাইবার সিকিউরিটি সার্ভিস (cyber security service);
(চ) ডিজিটাল ডেটা এনালাইটিক্স ও ডেটা সাইয়েন্স (digital data analytics and data science);
(ছ) মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস (mobile application development service);
(জ) সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও কাস্টমাইজেশন (software developement and customization);
(ঝ) সফটওয়্যার টেস্ট ল্যাব সার্ভিস (software test lab service);
(ঞ) ওয়েব লিস্টিং, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ও সার্ভিস (web listing, website developemtn and service)
(ট) আইটি সহায়তা ও সফটওয়্যার মেইনটেইন্যান্স সার্ভিস (IT assistance and software maintenance service)
(ঠ) জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিস (geographic information service)
(ড) ডিজিটাল এনিমেশন ডেভেলপমেন্ট (digital animation development)
(ঢ) ডিজিটাল গ্রাফিক্স ডিজাইন (digital graphics design)
(ণ) ডিজিটাল ডাটা এন্ট্রি ও প্রসেসিং (digital data entry and processing);
(ত) ই-লার্নিং প্লাটফর্ম ও ই-পাব্লিকেশন (e-learning platform and e-publication)
(থ) আইটি ফ্রিল্যান্সিং (IT freelancing);
(দ) কল সেন্টার সার্ভিস (call center service);
(ধ) ডকুমেন্ট কনভার্সন, ইমেজিং ও ডিজিটাল আর্কাইভিং (document conversion, imaging and digital archiving);
 
 

একজন করদাতাকে প্রতি বছর আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। উক্ত রিটার্নটি করদাতা যে অধিক্ষেত্রাধীন সার্কেলের অধিন উক্ত সার্কেলে অথবা ই-টিআইএনে উল্লেখিত সার্কেলে জমা করতে হবে। তাছাড়াও অনলাইনে জমা দেওয়ার জন্য https://etaxnbr.gov.bd/ এই সাইটটি ব্যবহার করতে পারে।

কর আপিল দায়ের করার ক্ষেত্রে ২০০/- টাকা ফি প্রদান করতে হয়।

আয়কর আইন, ২০২৩ এর সপ্তম অংশের বিধান অনুসারে নিম্নরূপে উৎসে কর্তনকৃত কর জমা করতে হবে।

ক্রমিক নং কর্তন ও সংগ্রহের সময় সরকারী কোষাগারে জমাদানের তারিখ
অর্থবৎসরের জুলাই  থেকে মে মাসের যেকোন কর্তন বা সংগ্রহের ক্ষেত্রে কর্তন বা সংগ্রহের মাসের শেষে পরবর্তী ০২ (দুই) সপ্তাহের মধ্যে
অর্থবৎসরের জুন মাসের ১ম থেকে ২০ তম দিনের যে কোন দিনের কর্তন বা সংগ্রহের ক্ষেত্রে কর্তন বা সংগ্রহের দিনের পরবর্তী ০৭ (সাত) দিনের মধ্যে
অর্থবৎসরের জুন মাসের অন্যান্য যে কোন দিনের কর্তন বা সংগ্রহের ক্ষেত্রে কর্তন বা সংগ্রহের পরবর্তী দিন
অর্থবৎসরের জুন মাসের শেষ কর্মদিবসে কর কর্তন বা সংগ্রহের ক্ষেত্রে কর্তন বা সংগ্রহের দিন

 

 

আয়কর আইন, ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসীল, অংশ-১ এর ৩৬(ক) অনুযায়ী কোন স্বাভাবিক ব্যক্তি কর্তৃক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ লেনদনে হতে কোন আয় অর্জিত হলে উক্ত আয়ের ৫০ লক্ষ টাকা করমুক্ত। তবে এর অধিক গৃহীত হলে উক্ত আয়ের উপর ১৫% হারে কর প্রদান করতে হবে। 

তবে কোনো কোম্পানি বা তহবিলের স্পন্সর, ডিরেক্টর বা প্লেসমেন্ট শেয়ার বা ইউনিটের ক্ষেত্রে এই করমুক্তির বিধান প্রযোজ্য হবে ।

আয়কর আইন, ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসীল, অংশ-১ এর ৩৬(ক) অনুযায়ী দাতা ও গ্রহীতার রিটার্নে প্রদর্শিত হবার শর্তে স্বামী-স্ত্রী, আপন ভাই বা বোন, মাতা-পিতা বা সন্তানের নিকট হতে দান হিসাবে গৃহীত কোনো পরিসম্পদ করমুক্ত থাকবে। তবে যেক্ষেত্রে উক্ত দান বিদেশ হতে বাংলাদেশে অবস্থিত গ্রহীতার নিকট ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রেরিত হবে সেক্ষেত্রে দাতার রিটার্ন প্রদর্শন বাধ্যতামূলক নয়।

আয়করের জন্য ব্যবহৃত সকল ফরমসমূহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। তাছাড়াও যাবতীয় ফরমসসমূহ বিডি ট্যাক্সেশন এর ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে সম্পূর্ণ ফ্রি।

একজন করদাতার করযোগ্য আয় হলে সর্বনিম্ন কর প্রদান করতে হয়। এক্ষেত্রে এলাকাভেদে সর্বনিম্ন করের পরিমাণ একেক রকম। এলাকাভেদে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের জন্য সর্বনিম্ন করের পরিমাণ নিম্নরূপঃ

এলাকার বিবরণ নূন্যতম কর (টাকা)
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ৫,০০০/-
অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন ৪,০০০/-
সিটি কর্পোরেশন এর বাইরে ৩,০০০/-

আয়কর আইন, ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসীল, অংশ-১ এর ৩৬(ক) অনুযায়ী একজন  বেতনভোগী করদাতার তার বেতন খাতে প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাৎসরিক মোট প্রাপ্তির ১/৩ অংশ অথবা সর্বোচ্চ ৫,০০,০০০/- টাকা করমুক্ত হিসেবে অনুমোদন করা হয়।এর অতিরিক্ত হলে অতিরিক্ত টাকা করযোগ্য আয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কোন বেতনভোগী করদাতা যদি প্রতিষ্ঠান হতে মোটরগাড়ী সুবিধা পেয়ে থাকেন তাহলে একটি অঙ্ক আয় হিসেবে যোগ হবে। যা নিম্নরূপঃ

১। ১৫০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ীর বিপরীতে প্রতি মাসে ১৫ (পনের) হাজার টাকা। 

২। ১৫০০ সিসির অধিক কিন্ত ২০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ীর বিপরীতে প্রতি মাসে ২০ (বিশ) হাজার টাকা। 

৩। ২০০০ সিসির অধিক কিন্ত ২৫০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ীর বিপরীতে প্রতি মাসে ৩০ (ত্রিশ) হাজার টাকা। 

৪। ২৫০০ সিসির অধিক গাড়ীর বিপরীতে প্রতি মাসে ৫০ (পঁঞ্চাশ) হাজার টাকা।

আয়কর আইন, ২০২৩ এর ১৭৭ ধারা অনুযায়ী প্রতি ৩ মাসের জন্য নিম্নবর্ণিত সময়ে উৎসে করের রিটার্ন দাখিল করতে হবে:

অর্থবৎসরের তারিখ যে মাসের জন্য প্রযোজ্য
(১) (২)
২৫ অক্টোবর জুলাই, আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর
২৫ জানুয়ারি অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর
২৫ এপ্রিল জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ
২৫ জুলাই এপ্রিল, মে ও জুন

তবে উক্ত তারিখে সাপ্তাহিক বা সরকারি কোনো ছুটির দিন থাকলে পরবর্তী অফিস খোলার প্রথম দিন রিটার্ন দাখিল করতে হয়।

ই-টিআইএন রেজিষ্ট্রেশন https://secure.incometax.gov.bd/ এই ঠিকানা থেকে করতে হয়।

আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী আয়ের খাত ৭টি। যা নিম্নরূপঃ

১. চাকরি হতে আয়

২. ভাড়া হতে আয়

৩. কৃষি হতে আয়

৪. ব্যবসা হতে আয়

৫. মুলধনী আয়

৬. আর্থিক পরিসম্পদ হতে আয়

৭. অন্যান্য উৎস হতে আয়

আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা-২(৪৫) অনুযায়ী করদাতা যদি একটি আয় বছরে একটানা বা অনিয়মিতভাবে কমপক্ষে ১৮৩ দিন বাংলাদেশে থাকেন, তাহলে তিনি “নিবাসী” হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে কোন ব্যক্তি যদি আয় বছরে একটানা বা অনিয়মিতভাবে কমপক্ষে ৯০ দিন বাংলাদেশে অবস্থান করেন এবং এর পূর্ববর্তী ৪ বছরে একটানা বা অনিয়মিতভাবে সর্বমোট কমপক্ষে ৩৬৫ দিন বাংলাদেশে অবস্থান করেন তাহলেও তিনি নিবাসী হিসেবে গণ্য হবেন।

অনিবাসী করদাতার করহার ৩০%।

আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে করদাতার সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের উপর ধার্যকৃত করের ১০% (দশ শতাংশ) হারে জরিমানা আরোপ করা হয়, যা সর্বনিম্ন ১ (এক) হাজার টাকা। 

আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী, যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত কোনো করদাতা রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হলে তার সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের উপর ধার্যকৃত করের ১০% (দশ শতাংশ) হারে জরিমানা আরোপ করা হয়, যা সর্বনিম্ন ১ (এক) হাজার টাকা এবং ব্যর্থতা অব্যাহত থাকলে প্রতিদিনের জন্য ৫০ (পঞ্চাশ) টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করা হয়। এক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত শর্তসমূহ প্রযোজ্য হবে; 

(ক) পূর্বে কখনোই কর নির্ধারণ করা হয় নি এমন করদাতার জন্য ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা। 

(খ) পূর্বে কর নির্ধারণ করা হয়েছে এমন করদাতার ক্ষেত্রে সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের উপর প্রদেয় করের ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) অথবা ১ (এক) হাজার টাকার মধ্যে যেটা অধিক হবে সেটাকে জরিমানা হিসেবে ধার্য্য করা হয়। 

আয়কর রিটার্ন জমাদানের জরিমানা সম্পর্কিত বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আয়কর আইন ২০২৩ এর ২৬৬ ধারা পড়ুন।

 

রিটার্ন দাখিলকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ

(ক) যাদের করযোগ্য আয় রয়েছে এবং

(খ) যাদেরকে আবশ্যিকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

রিটার্ন  দাখিলের নির্দিষ্ট তারিখের পরবর্তীকালেও রিটার্ন দাখিল করা যাবে। এক্ষেত্রে আয়কর আইনের ধারা ১৭৪ মোতাবেক জরিমানাসহ কর পরিশোধ করতে হবে।

সরকারি বেতন আদেশভুক্ত একজন কর্মচারীর সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস (যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) করযোগ্য আয় হিসেবে বিবেচিত হবে। অবসরকালে প্রদত্ত ল্যাম্প গ্র্যান্টসহ কেবল সরকারি বেতন আদেশসমূহে উল্লিখিত নিম্নবর্ণিত ভাতা ও সুবিধাদি করমুক্ত থাকবেঃ

চিকিৎসা ভাতা, নববর্ষ ভাতা, বাড়ি ভাড়া ভাতা, শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা, কার্যভার ভাতা, পাহাড়ি ভাতা, যাতায়াত ভাতা, টিফিন ভাতা, পোশাক ভাতা, আপ্যায়ন ভাতা, ধোলাই ভাতা, বিশেষ ভাতা, প্রেষণ ভাতা, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে প্র্রেষণ ভাতা, জুডিশিয়াল ভাতা, চৌকি ভাতা, ডোমেস্টিক এইড এলাউয়েন্স, ঝুকি ভাতা, একটিং এলাউয়েন্স, মোটরসাইকেল ভাতা, আর্মরার এলাউয়েন্স, নিঃশর্ত যাতায়াত ভাতা, টেলিকম অ্যালাওয়েন্স, ক্লিনার অ্যালাওয়েন্স, ড্রাইভার অ্যালাওয়েন্স, মাউন্ডেট পুলিশ অ্যালাওয়েন্স, পিবিএক্স অ্যালাওয়েন্স, সশস্ত্র শাখা ভাতা, বিউগলার অ্যালাওয়েন্স, নার্সিং অ্যালাওয়েন্স, দৈনিক বা খোরাকী ভাতা, ট্রাফিক অ্যালাওয়েন্স, রেশন মানি, সীমান্ত ভাতা, ব্যাটম্যান ভাতা, ইন্সট্রাকশনাল অ্যালাওয়েন্স, নিযুক্তি ভাতা, আউটফিট ভাতা এবং গার্ড পুলিশ ভাতা।

একজন স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা রিটার্ন দাখিলের নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হলে বিনিয়োগজনিত কোন রেয়াত প্রাপ্য হবেন না। এক্ষেত্রে মোট আয়ের উপর আরোপযোগ্য আয়করের অংক থেকে কর রেয়াতের কোন অংক বাদ না দিয়ে প্রদেয় করের অংক পরিগণনা করতে হবে।

নিয়মিত উৎসের আয়ের উপর কর রেয়াত দাবী করা যাবে। কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয়, হ্রাসকৃত করহার প্রযোজ্য আয়, অংশীদারী ফার্ম বা ব্যক্তিসংঘ হতে আয় এবং চূড়ান্ত করদায় প্রযোজ্য হয় এরূপ আয়ের বিপরীতে সৃষ্ট করদায়ের বিপরীতে বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত দাবী করা যাবে না।

করদাতার স্বামী/স্ত্রী বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তনাদের নামে যদি পৃথকভাবে আয়কর নথি না থাকে তাহলে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩১(১) অনুযায়ী তাদের আয় করদাতার আয়ের সাথে একত্রে প্রদর্শন করতে হবে।

 

কোন ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের আয় উক্ত ব্যক্তির মোট আয়ের অন্তর্ভূক্ত হবে, যদি-

(অ) উক্ত স্বামী বা স্ত্রী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান তার উপর নির্ভরশীল হন;

(আ) এরূপ আয়ের উপর উক্ত ব্যক্তির যুক্তিসঙ্গত নিয়ন্ত্রণ থাকে’ বা

(ই) তিনি এরূপ একীভুতকরণে ইচ্ছুক হন:

 

তবে, উক্ত স্বামী বা স্ত্রী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের পৃথক কর নির্ধারণ করা হলে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না।

আর্থিক পরিসম্পদ হতে আয়ের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত খরচসমূহ অনুমোদিত হবে, যথাঃ-

(ক) ব্যাংক বা ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক করদাতাকে সুদ বা মুনাফা প্রদানের বিপরীতে আয়কর ব্যতীত কর্তনকৃত অর্থ;

(খ) কেবল “আর্থিক পরিসম্পদ হতে আয়” অর্জনের উদ্দেশ্যে ঋণকৃত অর্থের উপর পরিশোধিত সুদ;

(গ) কেবল সংশ্লিষ্ট আয় অর্জনের উদ্দেশ্যে নির্বাহকৃত অন্য কোন ব্যয়

১। আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা-১৮০ অনুযায়ী স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিলের পর যদি করদাতা নিম্নবর্ণিত কারণসমূহ দেখেনঃ

(ক) প্রদর্শিত আয়ের কারণে বা

(খ) দাবিকৃত কর অব্যাহতি বা ক্রেডিটের কারণে; বা

(গ) অন্য কোন কারণে

উল্লেখিত কারণসমূহে করদাতা যদি দেখেনে তার প্রদেয় কর সঠিকভাবে পরিগণনা করা হয়নি বা রিটার্নে কোন তথ্য সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় নি, তাহলে একটি লিখিত বিবৃতি সহকারে রিটার্ন দাখিলের নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে একটি সংশোধিত  রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। তবে, নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করা যাবে না, যথাঃ-

(ক) রিটার্ন দাখিল করার তারিখ হতে ১৮০ (একশত আশি) দিন শেষ হওয়ার পর;

(খ) সংশোধিত রিটার্ন প্রথমবার দাখিলের পর; বা

(গ) মূল রিটার্নটি ধারা ১৮২ এর অধীনে অডিটের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর।

২। আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা-১৭৫ অনুযায়ী সাধারণ পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল করলে উক্ত রিটার্নে যদি কোন অশুদ্ধ ‍বিবৃতি দেখা যায়, তাহলে করদাতা কোন করদায় হ্রাস না করে কর নির্ধারণের পূর্বে সংশোধিত রিটার্ন  দাখিল করতে পারবেন।

 

 

না। কোন কর পরিশোধ এর বাধ্যবাধকতা থাকবেনা। বিদেশ হতে প্রেরিত অর্থের সুবিধাভোগী মা হওয়ায় এর উপর কোন প্রকারের করারোপ প্রযোজ্য হবে না।

আয়কর আইন, ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসীল অংশ-১ এর দফা (১৭) অনুযায়ী কোন করদাতা কর্তৃক বিদেশে উপার্জিত কোন আয় যা তিনি বৈদেশিক রেমিটেন্স সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন অনুসারে এনেছেন, উক্ত আয়ের উপর কোন কর দিতে হবে না।

আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা-৫৫(ঘ) অনুযায়ী অনুমোদিত পারকুইজিট এর পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকা।

কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ এর ধারা-১০৩ অনুযায়ী কোন পরিচালক কোম্পানী হতে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন না। তবে যদি ঋণ গ্রহণ করেন তাহলে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা-২ এর উপ ধারা- ৮১(ছ) অনুযায়ী উক্ত টাকা লভ্যাংশ আয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

করমুক্ত সীমার উর্ধ্বে আয় আছে এমন করদাতার প্রদেয় আয়করের পরিমাণ তার জন্য প্রযোজ্য নূন্যতম আয়করের পরিমাণ অপেক্ষা কম হলে, অথবা বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত বিবেচনার পর প্রদেয় আয়করের পরিমাণ প্রযোজ্য নূন্যতম আয়করের কম, শূন্য বা ঋণাত্মক হলেও করদাতাকে তার জন্য প্রযোজ্য নূন্যতম আয়কর পরিশোধ করতে হবে।

আয়কর নির্দেশিকাঃ ২০২৪-২০২৫

আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা-৪৬(১০) অনুযায়ী ধারা-১৮০ এর অধীনে দাখিলকৃত রিটার্ন প্রথম বছর প্রদর্শিত ব্যবসায়িক মূলধন পরবর্তী ৫(পাঁচ) বৎছরের মধ্যে ঘাটতি হলে বা স্থানান্তর করা হলে উক্ত ঘাটতি বা স্থানান্তরিত অংক যে বর্ষে স্থানান্তর করা হবে উক্ত বর্ষের ব্যবসায়িক আয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ১৪০ অনুযায়ী  “নির্দিষ্ট ব্যক্তি” অর্থ-

(ক) কোনো কোম্পানি, ফার্ম, ব্যক্তিসংঘ, ট্রাস্ট বা তহবিল;

(খ) পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ;

(গ) কোনো বিদেশি ঠিকাদার, বিদেশি এন্টারপ্রাইজ বা বাংলাদেশের বাহিরে প্রতিষ্ঠিত কোনো সংঘ বা সংস্থা;

(ঘ) কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার;

(ঙ) বার্ষিক এক কোটি টাকার অধিক টার্নওভার বিশিষ্ট কোনো ই-কমার্স প্লাটফর্ম, যাহা অন্য কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি নহে, যে নামেই অভিহিত হউক না কেন;

(চ) বার্ষিক ১ (এক) কোটি টাকার অধিক টার্নওভার বিশিষ্ট হোটেল, রিসোর্ট, মোটেল, রেষ্টুরেন্ট, কনভেনশন স্টোর, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি;

(ছ) কৃষক নহেন এইরূপ কোনো ব্যক্তি যিনি তামাক পাতা, সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুল ও অন্যান্য তামাক জাতীয় পণ্য উৎপাদন এবং সরবরাহে জড়িত;

See More